৬ মাসের মধ্যে সম্প্রচার আইন ও কমিশন

প্রকাশঃ জানুয়ারি ২০, ২০১৫ সময়ঃ ৬:২৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

tv channelআগামী ৬ মাসের মধ্যে জাতীয় সম্প্রচার আইন প্রণয়ন ও সম্প্রচার কমিশন গঠিত হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় সংসদের বৈঠকে শুরু হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতেই মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা পর্বে অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতে সম্প্রচার আইন করতে ৬ মাস সময় লাগবে। আমি আশ্বস্ত করছি- আগামী ৬ মাসের মধ্যে জাতীয় সম্প্রচার আইন ও সম্প্রচার কমিশন গঠিত হবে।

তিনি জানান, বিশ্বে গণমাধ্যমকেও আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হতে হয়। সম্প্রচারে গণমাধ্যমেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সবার অধিকার নিশ্চিত হবে। আইন প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শওকত চৌধুরীর তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান,  এই আইন প্রণয়ন হলে টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তুর মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে এবং বিজ্ঞাপন প্রচারের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।

এসময় তিনি আরো জানান, গণমাধ্যমের অংশীজনদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। তারা আইনের খসড়া তৈরিতে ২ মাসের মত সময় নেবেন। খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। পরে অংশীজনদের মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে পরিমার্জন ও সংশোধন করা হবে। এতে আরো এক মাস সময় লাগবে।

ইনু বলেন, ‘বেসরকারি টিভিতে বিজ্ঞাপন বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। বিজ্ঞাপন প্রচারের সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিতকল্পে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, ২০১৪-তে বিজ্ঞাপন নীতিমালা শিরোনামে একটি অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে। সম্প্রচার আইন প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। এ আইন প্রণয়নের পরই সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হবে।’

বিভিন্ন টিভিতে হারবাল, ইউনানীসহ বিভিন্নজনের চটকদার ও প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের প্রচার বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে হাজী সেলিম প্রশ্ন করেন।

এর উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিটিভির নিজস্ব বিজ্ঞাপন নীতিমালা থাকলেও অন্যান্য চ্যানেলের জন্য অনুসরণীয় বিজ্ঞাপন নীতিমালা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ওষুধ নীতি-২০০৫-এ ওষুধ ও স্বাস্থ্য বিষয়াবলির ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের দ্বারা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধিনিষেধ আছে। অবৈধ পণ্য কিংবা ওষুধ বিপণন বিষয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার না করার জন্য বেসরকারি টিভি চ্যালেনগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সম্প্রচার কমিশন গঠিত হলে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করা সম্ভব হবে।’

এস এম জগলুল হায়দারের (সাতক্ষীরা-৪) প্রশ্নের উত্তরে ইনু বলেন, ‘গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের আওতায় জেলা পর্যায়ে ৬৪টি ও উপজেলা পর্যায়ে ৪টি তথ্য অফিসসহ মোট ৬৮টি তথ্য অফিস আছে। তবে আপাতত উপজেলা পর্যায়ে তথ্য অফিস করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।’

‘আধুনিক মানসম্পন্ন টেলিভিশন পরিচালনার লক্ষ্যে বিটিভির কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে কি না’ ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিটিভির সম্প্রচার কার্যক্রমকে যুগোপযোগী ও গতিশীল করতে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে রামপুরা টিভি কমপ্লেক্স ১২ তলা সদর দপ্তর ভবন নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন আছে। পাশাপাশি ৩৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যায়ে চট্টগ্রাম টিভি কেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ (সংশোধিত) প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়াও ৯শ ৯৭ কোটি টাকা ব্যায়ে ৫টি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ টিভি কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিটিভিকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ৯৪ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে মর্ডানাইজেশন, ডিজিটালাইজেশন এবং অটোমেশন অব বাংলাদেশ টিভি সেন্ট্রাল সিস্টেম শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। ৭০১ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশব্যাপী ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার প্রবর্তন শীর্ষক প্রকল্পও গ্রহণ করা হবে।’

ফকরুল ইমামের (ময়মনসিংহ-৮) প্রশ্নের উত্তরে ইনু বলেন, ‘প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা থেকে প্রকাশিত সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্ত পত্রিকাকে দৈনিক প্রচার সংখ্যার উপর ভিত্তি করে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেয়া হয়। এরমধ্যে বাংলা দৈনিক পত্রিকার প্রচার সংখ্যা ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার হলে ২টি এবং ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার একই প্রচার সংখ্যায় ৩টি কার্ড প্রদান করা হয়।’

ভারতে বাংলাদেশি চ্যানেল প্রদর্শন প্রক্রিয়াধীন:

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানান, ভারতে বাংলাদেশের কোনো চ্যানেল দেখানো হয় না- তা পুরোপুরি সঠিক নয়। কয়েকটি চ্যানেল দেখানো হয়। বিদেশি চ্যানেল প্রদর্শনে ভারতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে স্থানীয় ক্যাবল অপরারেটরদের সঙ্গে চুক্তিতে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক দিকটি খাপ না খাওয়ায় কিছুটা জটিলতা রয়েছে। তিনি জানান, ভারতের তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে আমার কথা হয়েছে। কিছুদিনের ভেতর পরিস্থিতির উন্নতি হবে আশা করি। আশা করি, সহজ উপায়ে সেখানে বাংলাদেশের চ্যানেল দেখানোর বিষয়টি সম্ভব হবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/চামেলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G